২০১১ সালের এপ্রিলে বিস্ময়কর একটি চশমার ধারণা দিয়ে বিশ্বে হৈচৈ ফেলে
দিয়েছিল গুগল৷ এখন পর্যন্ত ‘গুগল গ্লাস’ নামে পরিচিত এই বস্তুটি আসলে
মোবাইল কম্পিউটার আর চশমার মিলিত এক রূপ৷এই চশমাটি দিয়ে ছবি তোলা, ইন্টারনেট ব্যবহার, ভিডিও রেকর্ড করা, এসএমএস
পাঠানো, এমন সব কাজ করা যায়৷ অর্থাৎ হালের স্মার্টফোন দিয়ে যা করা সম্ভব
তা-ই করা যায় চোখে পরা এই চশমাটি দিয়ে৷গুগলের এই চশমাটি এখন ব্যবহার করছেন নির্বাচিত কিছু ব্যক্তি, যার মধ্যে
রয়েছেন সফটওয়্যার ডেভেলপার, প্রোগ্রামার ইত্যাদি৷ তাদের দেয়া বিভিন্ন
পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি হবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য চশমা৷ নির্বাচিত
এই ব্যক্তিরা দেড় হাজার ডলার দিয়ে চশমাটি কিনেছেন৷গুগলের নির্বাহী চেয়ারম্যান এরিক স্মিডট বলেছেন, ‘কিছুদিন' এর মধ্যেই
চশমাটি বাজারে আসতে পারে৷ আর দামটা স্মার্টফোনের চেয়ে বেশিই হবে বলে আগেই
জানিয়েছিল গুগল৷গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে গুগলের একটি সম্মেলনে এই বিস্ময় চশমা নিয়ে অনেক
আলোচনা হয়েছে৷ প্রোগ্রামারদের এই সম্মেলনে অনেকেই চশমা পরে উপস্থিত
হয়েছিলেন৷ সেখানেই ফেসবুক আর টুইটার গুগল গ্লাসের জন্য তৈরি অ্যাপ এর
উদ্বোধনী ঘোষণা দেয়৷ এর ফলে ব্যবহারকারীরা চশমা দিয়ে ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে
সেটা ফেসুবকে দিয়ে দিতে পারবেন৷ তেমনি সেটা পোস্ট করা যাবে টুইটারেও৷
কিছু বিষয়ে আপত্তি
গুগল গ্লাস এখনো সাধারণের কাছে না এলেও আইন প্রণেতা থেকে শুরু করে অনেকেই
এর কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছেন৷ যেমন ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা থাকার কারণে
যত্রতত্র এর ব্যবহার ঠিক হবে কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ যেমন গুগলের
সম্মেলনেই অনেককে এই চশমা পরে টয়লেটে যেতে দেখা গেছে৷ যদিও তারা বলছেন ভুল
করেই তারা ভিডিও ক্ষমতা সম্পন্ন এই চশমা পরে টয়লেটে চলে গিয়েছিলেন, তবুও
সেটা ঠিক হয়নি বলেই মনে করছেন অনেকে৷এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ক্যাসিনো ও বার এ গুগল গ্লাস নিয়ে ঢোকাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
গুগলের বক্তব্য
গুগল কর্তৃপক্ষের দাবি, যেহেতু কম্পিউটারের ক্ষমতাসম্পন্ন চশমার ব্যবহার
এখনো নতুন পর্যায়ে রয়েছে তাই টুকটাক ভুল হতে পারে৷ যেমনটা হয়েছিল মোবাইল
ফোন আসার সময়৷ কিন্তু যখন মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে গেল তখন ব্যবহারকারীরা
নিজে থেকেই কিছু নিয়ম মেনে চলা শুরু করে৷ যেমন বাসে থাকার সময় মোবাইলে জোরে
কথা না বলা, বৈঠকে থাকার সময় রিংটোন বন্ধ করে রাখা ইত্যাদি৷ গুগল গ্লাসের
ব্যবহারও যখন বাড়বে তখনো মানুষ নিজের মতো করে নিয়ম বানিয়ে নেবে বলেই মনে
করছে গুগল কর্তৃপক্ষ৷